উৎকৃষ্ট মানের যব সংগ্রহ করে যত্ন সহকারে তা পরিষ্কার করার পর নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ভেজে সম্পূর্ন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুত করা হয় নিখাদ যব ছাতু তাই এর স্বাদ অনন্য। এতে কোন প্রকার কৃত্রিম উপাদান না থাকায় নিখাদ যব ছাতু সেরা।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
যবের ছাতুর ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখে। যবের ছাতু তে থাকা ফাইবার বা খাদ্যআঁশ পেটের হজম এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে, ফলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং দেহ পুষ্টি উপাদানগুলো ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি দ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
যবের ছাতুতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি খাবার হজমের গতি ধীর করে, ফলে গ্লুকোজ ধীরে ধীরে রক্তে মেশে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে। এজন্য নিয়মিত যবের ছাতু গ্রহণ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী । আর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রাকৃতিক খাবারের মধ্যে যবের ছাতু অন্যতম।
৩. কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে
যবের ছাতুতে থাকা অদ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়িয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার পেটের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে, যা অন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং আইবিএস (ইরিটেবল বাউল সিন্ড্রোম) সমস্যার উপশমে সাহায্য করে।
৪. ওজন কমাতে সহায়ক
যবের ছাতুতে থাকা ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, ফলে ক্ষুধা কম অনুভূত হয়। এটি অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ কমিয়ে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। এছাড়া এটি বিপাকক্রিয়া বাড়িয়ে শরীরের চর্বি জমতে দেয় না।
৫. হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
যবের ছাতু হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। আমাদের মানব দেহে ২ ধরণের কোলেস্টেরল পাওয়া যায়। একটি উপকারী ও অন্যটি ক্ষতিকর। আর এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা LDL হার্টের সমস্যার জন্য দায়ি। যবের ছাতু রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা LDL কমিয়ে উপকারী কোলেস্টেরল HDL বাড়াতে সাহায্য করে। যা মানবদেহের হার্টে কে সুরক্ষিত করে।
৬. শক্তি জোগায়
যবের ছাতু সহজে হজমযোগ্য এবং দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহ করে। এটি শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ও শরীরের ক্লান্তি বা অবসাদ দূর করে।
৭. ত্বকের জন্য উপকারী
যবের ছাতু ত্বকের যত্নেও ব্যবহার করা যায়। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখে। যবের ছাতু দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে মুখে লাগান। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
৮. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
যবের ছাতুতে থাকা বিটাগ্লুকান নামক একটি প্রাকৃতিক উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শ্বেত রক্তকণিকাকে সক্রিয় করে, যা সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া, যবে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিনগুলো শরীরকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত যবের ছাতু গ্রহণ রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে।
৯. মানসিক চাপ কমায়
যবের ছাতুর ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন-বি মানসিক চাপ কমাতে কার্যকর। এটি মস্তিষ্কে সেরোটোনিন হরমোন উৎপাদন বাড়িয়ে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং মনোযোগ বাড়াতে এটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
উপাদানঃ যবে রয়েছে মালটোজ, গ্লুকোজ, স্যাকারিন, লেসিথিন, এল্যানটয়েন, এমাইলেস এবং ভিটামিন-বি।
সর্তকতাঃ সাধারন তাপমাত্রায় ও বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষন করুন। আগুন থেকে দূরে রাখুন।